শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন
আজ বৃহস্পতিবার যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সব সেনানিবাস, নৌঘাঁটি এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।
দিবসটি উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ (ONMC) -এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়– মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সশস্ত্র বাহিনী আমাদের গর্ব ও আস্থার প্রতীক। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্বের পাশাপাশি যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জাতীয় সংকট মোকাবিলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতাসহ জাতি গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে সশস্ত্র বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ (ONMC) -এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযুদ্ধে ওসমানীর অবদান সম্পর্ক বলা হয়, মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী ছিলেন তিনটি দেশের সেনাবাহিনীর অফিসার। ১৯৪২ সালে তৎকালীন বৃটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ মেজর ছিলেন তিনি। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি হয়েছিলেন একটি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক। একটি দেশের স্বাধীনতার পথে মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান, একটি দেশকে স্বাধীনতা এনে দেয়ার রণাঙ্গনের অন্যতম মহারথী।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত হয় মুজিবনগর সরকার, ওসমানীকে করা হয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি।
এম এ জি ওসমানীর নির্দেশনা অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে এক একজন সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়োগ দেয়া হয়। বিভিন্ন সেক্টর ও বাহিনীর মাঝে সমন্বয় করা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখা, অস্ত্রের যোগান নিশ্চিত করা, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা- প্রভৃতি কাজ সাফল্যের সাথে পালন করেন ওসমানী। ১২ এপ্রিল থেকে এম. এ. জি. ওসমানী মন্ত্রীর সমমর্যাদায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন৷
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ছিল দক্ষ এবং সংখ্যায় অনেক বেশি৷ এই বিবেচনায় ওসমানীর রণকৌশল ছিল প্রথমে শত্রুকে নিজেদের ছাউনিতে আটকে রাখা এবং তাদেরকে যোগাযোগের সবগুলো মাধ্যম থেকে বিছিন্ন করে রাখা৷ এজন্য এম. এ. জি. ওসমানী মে মাস পর্যন্ত নিয়মিত পদ্ধতিতে যুদ্ধ পরিচালনা করেন৷ মে মাসের পর তার মনে হয় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কমসংখ্যক সৈন্য নিয়ে শত্রুকে ছাউনিতে আটকে রাখা গেলেও ধ্বংস করা সম্ভব নয়৷
এ বিষয়টি তিনি সরকারকে জানিয়ে যুদ্ধে কৌশলগত পরিবর্তন আনেন৷ প্রাক্তন ইপিআর এর বাঙালি সদস্য, আনসার, মোজাহেদ, পুলিশ বাহিনী ও যুবকদের নিয়ে একটি গণবাহিনী বা গেরিলাবাহিনী গঠন করে মুক্তির সংগ্রামে এম, এ. জি. ওসমানীর হাতে কোনো নৌবাহিনী ছিল না। তবে নিয়মিত নৌবাহিনীর কিছু অফিসার এম. এ. জি. ওসমানীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতেন৷ তাছাড়া ফ্রান্সের জলাভূমিতে থাকা পাকিস্তানের ডুবোজাহাজের কিছু সংখ্যক কর্মীও মুক্তিবাহিনীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন৷
কিছুদিন পর এম. এ. জি. ওসমানী তাদের এবং কিছু সংখ্যক গেরিলা নিয়ে একটি নৌ-কমান্ডো বাহিনী গঠন করেন। আগস্টের মাঝামাঝিতে তারা নদীপথে শত্রুর চলাচল প্রায় রুদ্ধ করে দেন। নৌবাহিনী গঠনের ফলে একটা বড় ধরনের সংকটের অবসান হলেও দেশ স্বাধীন হবার আগে আগে আরও একটি সঙ্কট এম. এ. জি. ওসমানী অনুভব করেন। সেটি হচ্ছে তার হাতে কোনো বিমানবাহিনী ছিল না। শেষের দিকে দুটি হেলিকপ্টার ও একটি অটার আর তার নিজের চলাচলের জন্য একটি ডাকোটা নিয়ে ছোট্ট একটি বিমানবাহিনী গঠন করেছিলেন তিনি৷